শুরুটা ২০২২ সালের শেষের দিকে। তখন সবেমাত্র অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র। বাবার চায়ের দোকান চালানোর পাশাপাশি কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হওয়ার স্বপ্ন দেখা। সেই থেকে ‘রহস্য ট্রাভেল’ নামে একটি পেজ খুলে ভিডিও আপলোড দেওয়া শুরু। এখন প্রতিমাসে সেই পেজ থেকে আয় করছেন অর্ধলাখ টাকা।
বলছি যশোরের শার্শা উপজেলার ছোট নিজামপুর গ্রামের নয়ন হোসেনের (২৪) কথা। তিনি মৃত বাবুল মিয়ার ছেলে। চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার ছোট তিনি। কৃষি তথ্যনির্ভর ভিডিও তৈরি করেন নয়ন।
প্রথম প্রথম আশপাশের মানুষের কাছ থেকে কটু কথাও শুনতে হয়েছে নয়নকে। অনেকে তাকে নিয়ে হাস্যরসও করেছেন। তবে থেমে থাকেনি নয়ন। সব নেতিবাচক কথাকে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে গেছেন। আবার এসব কাজে সহযোগিতাও পেয়েছেন মামুন, মুন্না, মিনানুর, রিফাতসহ একাধিক তরুণের। ক্যামেরাম্যান হিসেবে সার্বক্ষণিক তাকে সহযোগিতা করছে শাহজালাল রিফাত। ভিডিও এডিটর হিসেবে পাশে পেয়েছেন প্রতিবেশী ভাতিজা মিনানুর রহমানকে। সকালে কলেজ ও বিকেলে চায়ের দোকান চালিয়ে অনলাইন জগতে পা রাখেন নয়ন। একদিন চায়ের দোকানে বসে ভিডিও আপলোড করে আয় করা যায় এ রকম তথ্য দেখে প্রথমে মোবাইলে ভিডিও তৈরির বিষটি মাথায় আসে। পরে মেজো ভাই শরীফ হোসেনের পরামর্শে বাবা ও তিন ভাইয়ের দেওয়া টাকায় ক্যামেরা কিনে সহযোগীদের নিয়ে মাঠ-ঘাটে ছুটতে থাকেন। এ সময় পারিবারিক জীবনে বড় ধরনের ধাক্কা খান তিনি। কয়েকটি ভিডিও বানানোর পর বাবাহারা হন নয়ন। সে সময় কনটেন্ট তৈরিতে অনিয়মিত হয়ে পড়েন। ফলে পেজের মনিটাইজেশন উঠিয়ে নেয় ফেসবুক। তিন মাস পর ২০২৩ সালের দিকে আবারও ফেসবুক-ইউটিউবে কাজ শুরু করেন নয়ন। শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে একের পর এক কৃষিভিত্তিক ভিডিও আপলোড করতে থাকেন। দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে এসব ভিডিও। বর্তমানে তার ‘রহস্য ট্রাভেল’ ফেসবুক পেজকে ফলো করেন প্রায় দুই লাখ মানুষ এবং ইউটিউবের তার ফলোয়ার ৪৫ হাজার। যা থেকে প্রতিমাসে তিনি অর্ধলাখ বা তারও বেশি টাকা আয় করছেন বলে জানান। কৃষিভিত্তিক ভিডিও তৈরি করতে গিয়ে কৃষি কর্মকর্তাদের অসহযোগিতা পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন নয়ন।