10.5 C
New York
বৃহস্পতিবার, মে ২২, ২০২৫

Buy now

spot_img

দেশের ৫৯ জেলায় নতুন করে জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এ নিয়ে ঘোর আপত্তি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বঞ্চিত ‘বিএনপিপন্থি’ হিসেবে পরিচিত কর্মকর্তারা। তাদের আপত্তির মুখে ডিসি নিয়োগের প্রজ্ঞাপন বাতিল হতে পারে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এদিকে, আজ বেলা ১১টায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সদ্য নিয়োগ পাওয়া ডিসিদের একটি ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। সেটি অনিবার্য কারণবশত স্থগিত করা হয়েছে। এজন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ডিসিদের পদায়ন হওয়া কর্মস্থলের উদ্দেশে যাত্রা করতে বারণ করা হয়েছে।

সোমবার এবং মঙ্গলবার দুই দিনে দেশের ৫৯ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ দেওয়া হয়। এ পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে হট্টগোল করেন উপ-সচিব পর্যায়ের একদল কর্মকর্তা।এদিন দুপুরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব কে, এম, আলী আযম ও জিয়াউদ্দিনের কক্ষে হট্টগোল করেন তারা। বেলা ৩টায় বঞ্চিত কর্মকর্তারা এ দুই যুগ্ম সচিবের কক্ষ অবরুদ্ধ করে রাখেন। কর্মকর্তাদের রোষ থেকে নিজেকে বাঁচাতে যুগ্ম সচিব আলী আযম পাশের রুমের টয়লেটে প্রবেশ করে দরজা বন্ধ করে দেন। প্রায় ২ ঘণ্টা পর সিনিয়র কর্মকর্তারা সেখানে গিয়ে তাকে বের করে আনেন।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগে সরকারের আমলে পদোন্নতিবঞ্চিত ছিলেন এসব কর্মকর্তারা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সম্প্রতি তাদের উপ-সচিব পদে পদোন্নতি দিয়েছে। ডিসি হওয়ার জন্য তাদের প্রত্যাশা ছিল।

সোমবার দেশের ২৫ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ দেওয়া হয়। মঙ্গলবার আরও ৩৪ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ হয়। তালিকায় নাম না দেখে হতাশ হয়ে হট্টগোল করেন তারা।

পরে দুই কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে বিকেল ৫টার দিকে প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবি নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও জনপ্রশাসন সচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বঞ্চিতরা। বৈঠকে দুই সচিব ক্ষুব্ধ কর্মকর্তাদের আশ্বাস দিয়ে জানান, তারা বিষয়টি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলবেন এবং সমাধানের চেষ্টা করবেন।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেষ পর্যন্ত ডিসি নিয়োগের দুই প্রজ্ঞাপন বাতিল হতে পারে।

যাদের নিয়ে আপত্তি

বঞ্চিত কয়েকজন উপ-সচিবের অভিযোগ, ডিসি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া বেশির ভাগ কর্মকর্তার আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা এবং সাবেক মন্ত্রীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল। কয়েকজনের শেয়ারবাজারে মোটা অংকের বিনিয়োগ রয়েছে। কারও কারও বিরুদ্ধে সহকর্মীকে হেনস্তা করার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া কয়েকজনের মাঠ প্রশাসনে কাজ করার অভিজ্ঞতা নেই।

দিনাজপুরের ডিসি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোহাম্মদ মোবাশশেরুল ইসলাম। এই কর্মকর্তা আওয়ামী লীগের সাবেক পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীমের একান্ত সচিব (পিএস) ছিলেন। শরীয়তপুরের ডিসি আব্দুল আজিজ সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলমের পিএস ছিলেন।

রাজশাহীর ডিসি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মাহবুবুর রহমান। আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাভোগী একই কর্মকর্তা নিজেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ‘শেখ হাসিনার ম্যান’ হিসেবে দাবি করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন। এই কর্মকর্তা জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গার আত্মীয় বলে জানা গেছে।

পঞ্চগড়ের ডিসি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের উপ-সচিব মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান। শেখ হাসিনা সরকারের সুবিধাভোগী এই কর্মকর্তা দীর্ঘ ৬ বছর এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের পিএস হিসেবে কাজ করেছেন।

নেত্রকোণার ডিসি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের উপ-সচিব বনানী বিশ্বাস। তার স্বামী স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সঙ্গে জড়িত। পরিবারের সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত থাকায় গত ১৫ বছর সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন তিনি। ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা থাকাকালে তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে।

সিরাজগঞ্জের ডিসি হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মনির হোসেন হাওলাদারকে। পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা থাকাকালে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের শিক্ষকের সঙ্গে শিষ্টাচার-বহির্ভূত আচরণের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।

নীলফামারীর ডিসি হওয়া শরিফা হক এবং বাগেরহাটের ডিসি হওয়া আহমেদ কামরুল হাসানের মাঠ প্রশাসনে কাজের অভিজ্ঞতা না থাকার অভিযোগ তুলেছেন বঞ্চিত কর্মকর্তারা।

Related Articles

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles