9.9 C
New York
বৃহস্পতিবার, মে ২২, ২০২৫

Buy now

spot_img

যশোরে জনপ্রিয় ইসলামি বক্তা ড. মিজানুর রহমান আজহারীর ওয়াজ মাহফিলে অংশ নিতে গিয়ে মোবাইল ফোন, স্বর্ণলংকার ও বিভিন্ন জিনিস হারিয়েছে অসংখ্য মানুষ। শনিবার (৪ জানুয়ারি) সকাল থেকে যশোর কোতয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে ভিড় জমান ভুক্তভোগীরা। বিকেল পর্যন্ত তিন শতাধিক জিডি হয়েছে। সংখ্যা আরও বাড়বে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।

শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) রাতে শহরতলী পুলেরহাট আদ-দ্বীন সকিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বর ও আশপাশ এলাকায় মাহফিলে গিয়ে মুসল্লিরা তাদের জিনিসপত্র হারিয়েছেন। মাহফিলের ভিড়ের মধ্যে পদদলিত ও ধাক্কাধাক্কিতে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১১ জন যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

জানা গেছে, আদ-দ্বীন ফাউন্ডেশন আয়োজিত তিন দিনব্যাপী তাফসিরুল কোরআন মাহফিলের শেষ দিন গতকাল শুক্রবার রাতে বক্তব্য দেন জনপ্রিয় ইসলামিক বক্তা ড. মিজানুর রহমান আজহারী। তার আসার খবরে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ঢল নামে সমগ্র মাহফিল এলাকা। শুক্রবার সকালে থেকেই শীত উপেক্ষা করে মানুষ জামায়েত হয়। বিকেল থেকে মাহফিল স্থান ছাপিয়ে সড়ক, মহাসড়কেও শিশু, নারী, পুরুষের ঢল নামে। দুপুরের পর সড়কে যানজট দেখা দেয়। এজন্য অনেকেই পায়ে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছায়। সব সড়কের ঢেউ গিয়ে মিশে পুলেরহাটে। মাহফিল প্রাঙ্গনে প্রায় ১৫ লাখ মানুষের সমাগম ঘটে। এদিন সন্ধ্যায় উক্ত মাহফিলে বক্তব্য দেন আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহও।

শুক্রবার গভীর রাত থেকে শনিবার বেলা ৩টা পর্যন্ত স্বর্ণলংকার ও মোবাইল খোয়া যাওয়ার ঘটনায় ৩০০ জিডি হয়েছে বলে জানিয়েছেন যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ডিউটি অফিসার শারমিন আক্তার। জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি বলেন, শুক্রবার রাত থেকে অসংখ্যা মানুষ মোবাইল হারিয়ে যাওয়া বা চুরির ঘটনায় জিডি করতে আসে। তাৎক্ষণিক যারা মোবাইলের ডকুমেন্ট দেখাতে পেরেছে তারা জিডি করতে পেরেছে। শনিবার সকাল থেকে রীতিমতো ভিড় লেগেছে। জিডির সংখ্যা বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মায়ের দেড় ভরি ওজনের একটি গলার হার খোয়া যাওয়ার পর শনিবার দুপুরে জিডি করতে আসেন সদরের রুপদিয়া থেকে ইব্রাহিম হোসেন। তিনি বলেন, আমরা মা মহিলা প্যান্ডেলে বসে আজহারী হুজুরের ওয়াজ শুনছিলেন। একপর্যায়ে গলায় হাত দিয়ে দেখেন তার গলায় হার নেই। তাই থানায় জিডি করতে এসেছি।

বউয়ের গলার চেইন হারিয়ে যাওয়ার পর থানায় জিডি করতে আসেন শহরতলী নওয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা হয়রত হোসেন। তিনি বলেন, এভাবে ওয়াজ মাহফিলে চুরি হওয়ার ঘটনা দুঃখজনক এবং অপরাধমূলক কাজ। লক্ষ লক্ষ মানুষের সমগম হয়েছে গতকাল। চোররাও এ ধরনের অনুষ্ঠানে সুযোগটা কাজে লাগায়।  কর্তৃপক্ষের আরও সর্তক ও ব্যবস্থাপনা ভালো করা উচিত ছিল। আর আমাদেরও সচেতন হওয়া উচিত ছিল, ব্যাপক সমগম স্থানে দামি দামি জিনিসপত্র পরিধান ও নিয়ে যাওয়া উচিত হয়নি।

যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক জানান, তিন দিনব্যাপী বৃহৎ মাহফিল হয়েছে যশোরে। পাঁচ থেকে সাত লাখ মানুষের সমাগম হয়েছে। এর ভেতরে অসংখ্যা মানুষের মোবাইল, স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র হারিয়ে যাওয়ার খবর পেয়েছি। অনেকেই জিডি করেছেন। কয়েকটি চুরির অভিযোগও পেয়েছি। পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে।

গত ১ জানুয়ারি থেকে তিন দিনব্যাপী এই মাহফিল শুরু হয়। মাহফিলের প্রথম দিন বুধবার আলোচনা করেন আল্লামা মামুনুল হক ও আব্দুল হাই মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ। বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিন আলোচনা করেন মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী ও মুফতি আমির হাজমা। শেষ দিন শুক্রবার আলোচনা করেন শায়খ আহমাদুল্লাহ ও ড. মিজানুর রহমান আজহারী।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles